![]() |
‘উফফ আপু তোমার এখানে এত গরম |
‘বস কিছুক্ষণ, একটু পরেই আরাম লাগবে। গরম তো পড়েছে, কি করবি বল’
‘সেটাই। তোমার এখানে কেউ নাই? এত বড় বাসায় একা থাকো?’
‘নাহ সবাই যে যার ক্লাসে। সুপারভাইজার আন্টি থাকে উপরতলায়, উনি অবশ্য অতটা বেশি খোঁজখবর যে নেন তা না। নিচে দারোয়ান আছে, সে-ই আড়চোখে খেয়াল রাখে কে আসছে কে যাচ্ছে।’
‘সিকিউরিটির এই অবস্থা? এখানে তোমাকে খালামনি আসতে দিলো?’
‘সিকিউরিটি ভালোই। কোন ছেলে আসলেই দারোয়ান তাকে প্রশ্ন করে করে অস্থির করে দিবে। ঝামেলা করলে কোত্থেকে যেন দারোয়ানের সাঙ্গোপাঙ্গোও চলে আসে।’
‘কোথায় আমি তো কাউকেই দেখলাম না। আর আমাকে তো আটকায়ওনি, এমনকি কিছু জিজ্ঞেসও করেনি।’
‘তুই তো বাচ্চা ছেলে। তোকে ছেলে হিসাবে চিন্তাও করেনি। অথবা তোর সিল্কি চুল দেখে হয়তো বুঝতেই পারেনি তুই ছেলে নাকি মেয়ে হাহাহা’
‘ভেরি ফানি!’
আপুর বাসায় এসেছি। খালাতো বোন। বাসা ঠিক না, বলা চলে মেস। আপু একটা প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে, খুলনা থেকে এখন ঢাকায় এসে নিজের মত পড়াশোনা থাকা খাওয়া সবকিছুর ব্যবস্থা। যে মেয়ে কখনো একা বাসা থেকে বের হতো না তাকে এখন একা ঢাকায় চলে আসতে হয়েছে পড়াশোনার জন্য। বেশ কয়েকদিন হয়েও গেছে ইতোমধ্যেই, আপুকে দেখে বোঝা যাচ্ছে বেশ মানিয়ে নিয়েছে এখানে। আমি কয়েকদিন আগে বেড়াতে এসেছি ঢাকায়, আরেকটা খালামনির বাসায় ছিলাম। সামার ভ্যাকেশন চলছে, কি করবো বাসায় বসে থেকে তাই মামা খালা সবার বাসায় বেড়াচ্ছি। হঠাৎ নিশি আপুর কথা মনে পড়লো, কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে চলে এসেছি। ক্লাস সেভেনের ছেলে এত ঘুরতে পারে সেটা না দেখলে বিশ্বাস করা কষ্ট। তার উপরে আমি বেশ ঘরকুণো, হঠাৎ করে বেরিয়েছি তাতে সবাই একটু অবাকই হয়েছে।
‘তোমার ক্লাস নাই আজকে?’
‘ছিলো। তুই আসবি তাই যাইনি আর’
‘হায় হায় আমার জন্য ক্লাস মিস? খালামনি জানলে তো আমাকে পিট্টি দিবে’
‘কিচ্ছু হবে না। তোর খালামনিকে জানাচ্ছে কে? আমার কাজিন বোনটা আসলো এতদূর থেকে আমি তার জন্য বাসায় থাকবো না?’
‘যাও আপু বোন বোন করতেসো কেন আজকে বাসায় ঢোকার পর থেকেই’
‘এত লম্বা চুল রাখলে বলবো না? এত লম্বা করসিস কেন চুল? বাসায় কিছু বলে না? স্কুলে ঘ্যাঁচ করে কেটে দেয় না?’
আমি আমার পিঠ পর্যন্ত লম্বা সিল্কি চুল নিয়ে একটু লজ্জায়ই পড়ে গেলাম বটে! চুল কি আমি সাধে লম্বা করেছি নাকি? করেছি বোনের খপ্পড়ে পড়ে। কোথায় সে পড়ে এসেছে বিভিন্ন রকম হেয়ারস্টাইলের কথা, এখন সেগুলো আমার উপরে করে দেখা চাই। নিজের চুলে করলে মানাবে কিনা কে জানে, পড়ে বান্ধবীদের টিটকারি শুনবে? তাই তার ভাইয়ার চুলের উপরেই এক্সপেরিমেন্ট করা চাই। কি আর করা, বছরের শুরু থেকে চুল কাটা যে বাদ দিয়েছি তো দিয়েছিই, লম্বা হতে হতে চুল এখন পিঠে এসে ঠেকেছে। এভাবে আর মাসখানেক গেলে যে পিঠের নিচের প্রান্তে চলে আসবে সেটাও বোঝাই যাচ্ছে। আমি চুল নিয়ে মোটেও লজ্জিত না অবশ্য, কিভাবে যেন আমার মুখে চুলটা বেশ মানিয়ে গেছে, মেয়েলিও লাগছে না তেমন। অবশ্য বাচ্চা একটা ছেলে, যার এখনো দাঁড়ি গোফ কিছু
No comments:
Post a Comment